BCS Preparation Tips নিয়ে লিখেছেন ৩৬তম বিসিএসের সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত সৈকত তালুকদার।
১. নতুন টপিক পড়া পুরোপুরি বন্ধ করে দিন।
২. কী পড়া উচিত ছিল আর কী পড়া উচিত হয়নি, এসব ভাবার দরকার নেই। শুধু আগে যা যা পড়েছেন, এখন সেগুলোই রিভিশন দিতে থাকুন।
৩. টেক্সট বই থেকে দূরে থাকুন। যেকোনো প্রকাশনীর একটা ডাইজেস্ট বা বিসিএস সংখ্যা পড়তে থাকুন। ৪. যে বিষয়গুলো কঠিন লাগে, সেগুলো এড়িয়ে যান। পরীক্ষায় ওই বিষয় থেকে প্রশ্ন আসবেই, এটা কোথায় লেখা আছে!
৫. যতটা সম্ভব বেশি বেশি পড়ার চেষ্টা করুন। শুধু প্রশ্ন আর উত্তরগুলো পড়ে যান। বিস্তারিত পড়ার এবং বিশ্লেষণ করার কোনো দরকার নেই।
৬. যে প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন, সেগুলোকে পড়া বন্ধ করে দিন।
৭. যেকোনো বই থেকে কয়েকটা মডেল টেস্ট দিন। টেস্টে কত নম্বর পেলেন, সেটা বিবেচ্য বিষয় না। দুই ঘণ্টায় শেষ করতে পারছেন কি না, সেটা খেয়াল করুন।
৮. ভালো প্রস্তুতি নিলেই যে প্রিলিমিনারি পাস হবে—এ কথা মনে করার কোনো কারণ নেই। প্রস্তুতি ভালো ছিল অথচ পরীক্ষার হলে ঘাবড়ে যাওয়ায় ভুল দাগানোর কারণে প্রিলিমিনারি পাস করেননি—এমন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। ৯. অন্যদের চেয়ে খারাপ আপনার প্রস্তুতি—এ কথা ভেবে হারার আগেই হেরে যাবেন না। দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন। মনোবল ধরে রাখুন।
১০. প্রিলিমিনারি পরীক্ষার নম্বর মেধাতালিকা প্রণয়নে কোনো ভূমিকা রাখে না। তাই প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নম্বর তোলার পরীক্ষা না, শুধু লিখিত পরীক্ষার ইয়েস কার্ড পাওয়ার পরীক্ষা।
১১. যাঁর প্রস্তুতি ভালো, তিনি হয়তো ১৪০ পেয়ে ইয়েস কার্ড পাবেন। আর আপনি ১২০ পেয়ে ইয়েস কার্ড পাবেন, এতে সমস্যা কী? ইয়েস কার্ড পেলেই কেল্লাফতে।
BCS Preparation Tips
১২. পড়তে ভালো লাগলে পরীক্ষা হলে প্রবেশের পূর্ব পর্যন্ত পড়বেন। ভালো না লাগলে অবশ্যই পড়বেন না। তবে রাত জাগবেন না।
১৩. আগের দিন রাতেই পরের দিন সকালে পরীক্ষার জন্য কী কী লাগবে, সেগুলো গুছিয়ে রাখবেন এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে কী কী কাজ করবেন, সেটার একটা তালিকা করে টেবিলে রাখবেন। সকালে তালিকা অনুযায়ী কাজ করবেন।
১৪. টেনশনে সকালের নাশতা কম বা বেশি খাবেন না। স্বাভাবিক খাবার খাবেন।
১৫. বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কয়েকটি কালো বলপয়েন্ট কলম, প্রবেশপত্র ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস সঙ্গে নেবেন। বৃত্ত ভরাট করার জন্য ম্যাটাডোর আইটিন কলমটা ভালোই। পরীক্ষার হলে মোবাইল, ঘড়ি, ব্যাগ, ক্যালকুলেটর, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ইত্যাদি নিতে পারবেন না।
১৬. হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হবেন, যাতে জ্যামে আটকা পড়লেও সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেন।
BCS Preparation Tips
১৭. একটু বেশি পড়ার জন্য বাসা থেকে ১০ মিনিট পরে বের হওয়ার কারণে পরীক্ষার হলে পৌঁছাতে দেরি হলে আপনাকে যে টেনশন ভোগ করতে হবে, সেটা ওই ১০ মিনিটে যা পড়েছেন তার চেয়েও বেশি কিছুকে ভুলিয়ে দেবে।
১৮. উত্তরপত্র পাওয়ার পর রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ যাবতীয় বিষয় সঠিকভাবে পূরণ করবেন। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নিশ্চিত করবেন।
১৯. প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর উত্তরপত্রের সেট কোডের সঙ্গে মিলিয়ে দেখবেন। প্রশ্নপত্রে ২০০টি প্রশ্ন এবং কোনো অস্পষ্টতা আছে কি না, সেটা একনজর দেখে নেবেন। সে রকম কিছু পেলে ইনভিজিলিটরকে জানাবেন।
২০. আপনি যে বিষয়টা ভালো পারেন, সেটা দিয়ে উত্তর করা শুরু করবেন।
২১. ২০০ বা ১৮০টা দাগাতেই হবে—এই চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। কতটা দাগালেন, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কতটা সঠিক উত্তর দিলেন।
২২. প্রশ্নে সঠিক উত্তর না থাকলে সেটা দাগাবেন না। একাধিক উত্তর থাকলে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য উত্তরটি দাগাবেন।
২৩. প্রশ্নে বা অপশনে সঠিক উত্তর থাকলে ছাপাজনিত কোনো ভুল থাকা সত্ত্বেও সেটা দাগাতে পারেন।
BCS Preparation Tips
২৪. পরীক্ষার হলে আশপাশে কারও দেখার দরকার নেই। আপনি একাই এক শ।
২৫. নিজে যা পারেন সেটাই দাগাবেন। নিজ বুদ্ধিতে ফকির হওয়া ভালো।
২৬. গণিত ও মানসিক দক্ষতা উত্তর করার সময় প্রশ্নের সাইডে ফাঁকা জায়গায় শর্ট নোট করবেন। সহজ যোগটাও প্রশ্নে লিখে করবেন। কারণ, পরীক্ষার হলে টেনশন থাকার ফলে সহজ যোগও ভুলে হয়ে যায়।
২৭. নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসনের প্রশ্নগুলো খুবই কাছাকাছি থাকে। তাই এই টপিকের প্রশ্নগুলো দাগানোর সময় যথাসম্ভব সতর্ক থাকবেন।
২৮. যে প্রশ্নটার উত্তর সবাই পারে, সেটাতে যেন আপনার নম্বর ছুটে না যায়, সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন।
২৯. প্রশ্ন কঠিন হলে হতাশ হবেন না। কঠিন প্রশ্ন সবার জন্যই কঠিন।
৩০. প্রথম থেকে সিরিয়াল ধরে সব প্রশ্ন উত্তর করতেই হবে—এমন কথা নেই। তিন ধাপে উত্তর করার চেষ্টা করবেন।
সরকারী চাকুরীর সর্বশেষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এখানেঃ Govt Jobs
৩১. প্রথম ধাপে যে প্রশ্নগুলোর উত্তরটা আপনি নিশ্চিত জানেন, সেগুলো ঝটপট দাগিয়ে ফেলার পাশাপাশি যে প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়ে আপনি কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন এবং যে প্রশ্নগুলো আপনি পারবেন কিন্তু সমাধান করতে সময় লাগবে, সেগুলো চিহ্ন দিয়ে রাখবেন।
৩২. দ্বিতীয় ধাপে যে প্রশ্নগুলো সমাধান করতে সময় লাগবে বলে স্কিপ করে গিয়েছিলেন, সেই প্রশ্নগুলো সমাধান করবেন।
৩৩. তৃতীয় ধাপে যে প্রশ্নগুলো নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন, সেগুলো নিয়ে কাজ করবেন। ৩৪. যদি দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকা প্রশ্নগুলোর উত্তর বের করতে না পারেন, তাহলে সেগুলো না দাগিয়ে একটা কাজ করবেন। আপনি এখন পর্যন্ত মোট কতটি সঠিক উত্তর দাগিয়েছেন, সেটা গুনে দেখবেন।
BCS Preparation Tips
৩৫. প্রশ্ন অনুযায়ী কাট মার্ক অনুমান করার চেষ্টা করবেন। ৩৬. ধারণা দেওয়ার জন্য বলে রাখি, প্রশ্ন একদম কঠিন হলে কাট মার্ক ৯০ আর সহজ হলে কাট মার্ক সর্বোচ্চ ১২০–এর মতো হতে পারে। ৩৭. যদি দেখেন আপনি কাট মার্কের চেয়ে অনেক বেশি সঠিক উত্তর দাগিয়ে ফেলেছেন, তাহলে আপনার আর দাগানোর দরকার নেই।
৩৮. যদি দেখেন কাট মার্কের সমান দাগিয়েছেন, তাহলে আরও কয়েকটা দাগানোর চেষ্টা করুন। কারণ, আপনার কাছে যেটা সঠিক সেটা পিএসসির কাছে সঠিক নাও হতে পারে। ৩৯. যদি দেখেন কাট মার্কের চেয়ে অনেক কম দাগিয়েছেন, যেটা দিয়ে কখনই ইয়েস কার্ড পাওয়া সম্ভব না, তখন কনফিউশনগুলোও দাগানোর চেষ্টা করবেন।
৪০. কারও পরামর্শ হুবহু মেনে চলার দরকার নেই। পরামর্শগুলোকে নিজের মতো করে সাজিয়ে কাজে লাগান।